আমাদের কথা
একটি অলাভজনক সামাজিক ও মানবিক প্রতিষ্ঠানের গল্প
পরিচয়
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। এটি একটি অলাভজনক সামাজিক ও মানবিক প্রতিষ্ঠান। প্রথমে যখন ব্যক্তিগত উদ্বোগে রক্তদাতা খোঁজা শুরু করি তখন বড় কোন পরিকল্পনা ছিল না। প্রথম দিকে কাগজে লিস্ট করে রক্তদাতা সংগ্রহ করেছি। কিন্তু এভাবে কাজ করতে গিয়ে বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখিন হই। সেগুলি সমাধানের পথ খুঁজতে গিয়ে এই সফটওয়ার/ওয়েবসাইট তৈরীর প্রয়োজন বোধকরি। আমাদের কাজ মূলত রক্তদাতা ও রোগীর মাঝে সংযোগ তৈরি করা। রক্তের জন্য অনুরোধ আসলে, আমরা রক্তদাতা লিস্ট দেখে রক্তদাতার সাথে রোগীর সংযোগ স্থাপন করে দেই। এখানে সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে যিনি স্বেচ্ছায় রক্ত দিতে ইচ্ছুক, তিনি নিজেই রেজিষ্ট্রেশন করতে পারবেন এবং রক্তদাতা কত তারিখে, কোথায় রক্ত দিয়েছেন, পরবর্তী রক্ত দেয়ার তারিখ, সবকিছু দেখতে পারবেন। এই সফটওয়ার তৈরী করার সময়ই চিন্তা আসে এটা সারা বাংলাদেশেই ছড়িয়ে দেয়া যায়। পরবর্তীতে সেই ভাবনা থেকে সফটওয়ার তৈরি করা হয়েছে।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার
সফটওয়ারটির কাজ শুরু করি ২০১৮/২০১৯ সালে। একভাইয়ের কাছ থেকে এটা ফ্রিতে তৈরি করে নেই। উনি এখন সরকারি জবে আছেন। এই সফটওয়ারটা তো ফ্রিতে তৈরি করে নিলাম কিন্তু সমস্যা হয় হোস্টিং এর সময়। হোস্টিং তো আর ফ্রি করা যায় না। তখন মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এলএলবি ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক হোসনে আরা বেগম ম্যাডাম, মানারাত ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল কলেজের এ্যাডমিন অফিসার সাইফুল্লাহ মির্জা শামীম ও ইবনে সিনার ইকবাল বাসার এর কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে ডোমেইন রেজিষ্ট্রেশন ও হোস্টিং করি। যদিও ডোমেইন রেজিষ্ট্রেশন ও হোস্টিং এর জন্য বেশী টাকা লাগে না কিন্তু সেই সময় আমার কাছে এই টাকাও ছিল না। যাই হোক তখন খুব বেশী রক্তদাতা সংগ্রহ করতে পারি নাই এবং পরবর্তীতে এই ওয়েবসাইটটা আপডেট করতে না পারায় সাইটটা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর এই সফটওয়ারের কাজ আবার শুরু করি ২০২১ সাল থেকে। কাগজের লিস্টের পাশাপাশি বিনা টাকায় একটি সফটওয়ার তৈরির জন্য প্রচেষ্টা চালাতে থাকি। যারা ভাল ডেভলপার তারা সময় পায় না। যিনি দীর্ঘ সময় নিয়ে এই সফটওয়ারটা মোটামুটি ডেভেলপ করে দিয়েছেন তিনি হচ্ছেন এডুসফট এর হামিম ভাই। কিন্তু তিনিও সময়ের অভাবে কাজটা শেষ করতে পারেন নাই। পরে তিনি অর্ধৈয্য হয়ে এই সফটওয়ারের সোর্সকোড ও ডাটাবেজ আমাকে দিয়ে দেন। আর বলেন আমি দোয়া করি আপনি একটা ভাল ডেভেলপার পাবেন, যে কাজটা আপনার প্রয়োজন অনুসারে শেষ করে দিতে পারবে। হামিম ভাই সফটওয়ারটা তৈরী করেন ASP.net দিয়ে। আমার সার্কেলে এই প্রোগ্রামিং জানা কাউকে পাইনি। পরে শরণাপন্ন হলাম মানারাত ইউনিভার্সিটির সিএসই ডিপার্টমেন্টের বিভিন্ন টিচারের। অবশেষে একজন টিচার ইভিনিং (১৯ ব্যাচ) হাফিজুর রহমান হাফিজ এর সাথে কথা বলিয়ে দিলেন। হাফিজ এই প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজে দক্ষ। ওর সাথে কাজ করে অল্প সময়ে এই সফটওয়ারে কাজটা শেষ করলাম। আলহামদুলিল্লাহ। এই সফটওয়ার/ওয়েবসাইট টি হোস্টিং এর সময় আবারও আর্থিক সহযোগীতা নিতে হল রংপুরের বন্ধু সুমন ও মানারাত ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল কলেজের এ্যাডমিন অফিসার সাইফুল্লাহ মির্জা শামিমের কাছ থেকে।
আগামীর পরিকল্পনা
এখন নতুন একটা সমস্যা তৈরী হয়েছে। আমাদের পরিকল্পনা এই ওয়েবসাইট দিয়ে সারা বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাড়ানো। এখন যদি এই সাইটে ৩০০০ ডোনার রেজিষ্ট্রেশন করেন তাহলে দিনে অন্ততঃ ৩০/৪০ টি ফোন কল আসবে। এই ৩০/৪০ টি ফোন কলের বিপরীতে রক্ত দাতা সংগ্রহ করতে অন্ততঃ ১২০/১৫০টা কল করা লাগবে। যেই কাজটি প্রতিদিন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে করা সম্ভব নয়। ভবিষ্যতে এই ডোনার সংখ্যা লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। এই বিশাল কর্মযজ্ঞ সমাধানের জন্য একটি কল সেন্টার দরকার হবে। যেখানে মানুষ রক্তের জন্য ফোন করবে। আমরা রক্তদাতাদের সাথে কথা বলে ঐ রোগীর জন্য রক্তের ব্যবস্থা করে দিব। এই ধরনের একটা প্রতিষ্ঠান চালানোর জন্য অনেক খরচের প্রয়োজন হবে। আমাদের পক্ষে স্বেচ্ছাশ্রমে যতদূর সম্ভব করেছি এবং বিনা টাকায় যতটুকু সম্ভব রক্তদাতা সংগ্রহ করে মানুষের পাশে দাড়াচ্ছি। কিন্তু কলসেন্টার পরিচালনা অর্থনৈতিক সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব না। এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য আমাদের সরাসরি টাকা দেয়া লাগবে না। অফিসের খরচটা বহন করলেই হবে। অফিসের খরচ বলতে অফিস ভাড়া, ইউটিলিটি বিল, কর্মচারীদের মাসিক বেতন। তবে অফিসের কাজ শুরু করলে অফিস সেটআপে বেশ বড় একটা খরচ হবে। কেউ ব্যক্তিগতভাবে বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগের সহযোগী হলে, দেশের অনেক অসহায় রোগী প্রয়োজনীয় মুহুর্তে জীবন বাঁচানোর মূল্যবান উপদান রক্ত পেতে পারেন।
স্বপ্ন দেখতে নেই মানা
- (১) আমরা স্বপ্ন দেখি আন্তর্জাতিক মানের ব্লাড ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করার। এখান থেকে রোগীরা ৩০০/৪০০ টাকায় প্রতি ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করতে পারবে। (তাও এই খরচটা নেয়া হবে সংশ্লিষ্ট মেডিকেল ইকুইমেন্ট ও স্যালাইন মিশ্রন বাবাদ)। অনেক জাগায় যেটা ক্ষেত্রবিশেষ ২৫০০-৩০০০ টাকাও লাগে।
- (২) দেশে রক্তের জন্য সবচেয়ে বেশী সমস্যায় পড়ে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা। আমরা স্বপ্ন দেখি এই ধরনের রোগীরা এখানে ৪০০/৫০০ টাকায় রক্ত পরিসঞ্চালন করে নিতে পারবে।
- (৩) এখন দেশে প্রচুর কিডনি রোগী। কিডনি রোগীদের অন্যতম সমস্যা হচ্ছে ডায়ালাইসিস করা। এটা অনেক ব্যয় বহুল। প্রতিবার ২২০০-৩০০০ টাকায় ১ জন রোগীকে প্রতি সপ্তাহে অন্তত: ১/২ বার ডায়ালাইসিস করা লাগে। ডায়ালাইসিসেও অনেক সময় রক্তের দরকার হয়। আমরা স্বপ্ন দেখি একজন রোগী এখানে ৫০০/৬০০ টাকায় ডায়ালাইসিস সম্পন্ন করতে পারবেন। যদি সুযোগ তৈরী হয় তাহলে এই সুবিধা জেলা শহর পর্যন্ত ছড়িয়ে দিব ইনশাআল্লাহ।
- (৪) রোগীর সু চিকিৎসার জন্য সঠিক ডায়াগনোসিস আবশ্যক। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই ডায়াগনোসিস অনেক ব্যয়বহুল। যদি কোন রোগীর সিটিস্ক্যান/এমআরআই দরকার হয় তখন অনেক রোগীর জন্যই কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়। আমরা স্বপ্ন দেখি রোগীরা অত্যন্ত কম খরচে সিটিস্ক্যান/এমআরআই করতে পারবে। এর জন্য সর্বনিম্ন চলতি খরচ যেমন টেকনিশিয়ানের বেতন, প্রিতিটি রিপোর্ট তৈরিতে এক্সপার্টের কনসালটেন্সির খরচ, ফিল্ম এর খরচ হিসাবে করে ফিস নির্ধারন করব। তবে অবশ্যই অন্য হাসপাতল থেকে অনেক কম হবে। আর অন্যান্য প্যাথলজিক্যাল টেস্টগুলি ৫০/১০০/২০০ টাকায় করে নিতে পারবেন। আমাদের এই স্বপ্ন আপনাদেরও স্বপ্ন হতে পারে। যদি আপনি বিত্তবান হন তাহলে আর্তমানবতার সেবায় নিজেই এই কাজগুলি শুরু করতে পারেন। আর যদি এই কাজে আমাদের সহযোগিতা দরকার হয় তাহলে সহযোগিতা করতে পারি। এছাড়া আপনিও আমাদের সহযোগী হতে পারেন। আমরা আপানদের সহযোগিতা পেয়ে অনেক দুর এগিয়ে যাতে চাই।
আমাদের অর্থনৈতিক ভাবে সহযোগিতার মাধ্যম
ফোন: 01977-514605 (সেলফিন, নগদ, রকেট, বিকাশ, Whatsapp)
Mohammad Munjur Morshed, Account no: 205017702027515, Islami Bank Bangladesh Ltd
Short Account No.: 27515, Account Name: Mohammad Munjur Morshed, Gulshan Branch
অনুদান পাঠানোর পর WhatsApp এ অবশ্যই একটা ছবি দিবেন অথবা মোবাইলে একটা ম্যাসেজ দেয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।